
মোঃ ফায়জুল হক দস্তগীর (আজাদ)
লাখো ভক্তের উপস্থিতিতে উপমহাদেশের অন্যতম আধ্যাত্মিক প্রাণকেন্দ্র, দরবারে গাউছুল আজম মাইজভান্ডার শরীফের আধ্যাত্মিক প্রাণপুরুষ,তরিকায়ে মাইজণ্ডারীর দিকপাল গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী হযরত শাহ্সূফি মাওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক:) মাইজভাণ্ডারী, প্রকাশ হযরত ছাহেব কেবলার ১১৫তম মহান বার্ষিক ওরশ শরীফ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে অনুষ্ঠিত হয়।
১০দিন ব্যাপি ওরশের গত রবিবার ছিল প্রধান ও শেষ দিন। দরবারের গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিল, হক মঞ্জিল, রহমান মঞ্জিল ও আমিন মঞ্জিলে পৃথক পৃথকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল মাজার শরীফে গোসল ও গিলাফ ছড়ানো,খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল, গাউসুল আজম মাইজভান্ডারীর জীবনী পর্যালোচনা, ফ্রি খৎনা, ফ্রি চিকিৎসা সেবা, দারিদ্র বিমোচন প্রকল্পের অধীনে অসহায়দের অনুদান প্রদান,ছেমা-কাওয়ালি মাহফিল,আখেরি মোনাজাত এবং তবারুক বিতরণ।
শনিবার গাউছুল আযম মাইজণ্ডারীর মাজার গোসল শরীফ, খতমে কোরআন, গিলাপ চড়ানো ও মিলাদের মাধ্যমে ওরশের মূল আনুষ্ঠানিকতার শুভ সূচনা হয়।
ওরশে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে জাতি,ধর্ম, বর্ণ, আবাল বৃদ্ধা বণিতা নারী, পুরুষ শিশুসহ ভক্তরা হাদিয়া তোহফা নিয়ে কাফেলা সহকারে দরবারে আসেন। ওরশে ভক্তদের মাজার হতে মাজারে ছুটাছুটি করে কোরানখানী, জেয়ারত, নামাজ দোয়া,মিলাদ, জিকির আযকার, জিকিরে ছেমা ও ভান্ডারী গানের মধ্যদিয়ে সময় পার করতে দেখা গেছে। আল্লাহু আল্লাহু ধ্বনিতে মুখরিত ছিল দরবার প্রাঙ্গণ।
দরবারে আগত মেহমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পুলিশ প্রশাসন, ডিবি, আনসার ভিডিপি ছাড়াও প্রত্যেক মঞ্জিলের সেবা-কর্মীগণ শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন।
এদিকে ১০দিনব্যাপি ওরশে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার কথা শুনা যায়নি। করোনা মহামারীতে দরবারের প্রত্যক মঞ্জিলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রবিবার সন্ধ্যা পরবর্তী পৃথক সময়ে নিজেদের মতো করে আখেরি মোনাজাত কিংবা বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিল, হক মঞ্জিল, রহমান মঞ্জিল ও আমিন মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন গণ আগত ভক্তবৃন্দ ও মেহমানদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে দরবার শরীফে আসার ব্যবস্থা করেন। ফলে কেন্দ্রীয়ভাবে মিলাদ ও মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়নি।
ওরশ শরীফে দেশ, জাতি ও বিশ্বমানবতার সর্বাঙ্গীন কল্যাণ ও বিশেষ করে করোনা মহামারী থেকে মুক্তি কামনা করে সাজ্জাদানশীন গণ পৃথক পৃথকভাবে আখেরি মোনাজাত করেন। গাউছিয়া আমিন মঞ্জিলে মোনাজাত পরিচালনা করেন সাজ্জাদানশীন হযরত শাহসুফি আলহাজ্ব সৈয়দ শামসুল আরেফিন মাইজভান্ডারী। তবারুক বিতরণের মধ্য দিয়ে দশ দিনব্যাপী কর্মসূচির পরিসমাপ্তি হয়।