
সৈকত দাশ ইমনঃ সাতকানিয়া উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ফকিরখীলস্হ হিমছড়ি খোলায় শ্রী শ্রী শুভলং ঠাকুরের ৩৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী স্বরণে বিশ্বশান্তি কামনায় শুভলং ঠাকুরের পূর্জা আজ ২০ মার্চ উপজেলার পুরাগড়ের ফকিরখীল ঐতিহ্যবাহী শুভলং ঠাকুরের মেলায় যার যার মনোবাসনা পূরণ করতে পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে শুভলং ঠাকুরের মন্দির প্রাঙ্গণে। যে যার সাধ্যমত ছাগল, কবুতর, গাভীর দুধ, স্বর্ণালংকার দান ও প্রসাদ বিতরণ করেছেন। আজ ২০ মার্চ ৬ চৈত্র, মাসের প্রথম শনিবার এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সাতকানিয়া চন্দনাইশ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ফকিরখীল গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী শুভলং ঠাকুরের মন্দির টি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দর্শনীয় স্থান নামে পরিচিত। এ মন্দিরে মানত করে মনোবাসনা পূরণ হয় বলে তাদের ধারণা। প্রতিবছর ৬ চৈত্র মাসের প্রথম শনিবার এ মন্দিরকে কেন্দ্র করে বসে বিশাল মেলা। সে মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপাল, ভুটান থেকে আসে সনাতনী সম্প্রদায়ের বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষ।
মেলার দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুণ্যার্থীদের ঢল নামে। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, ধর্ম প্রচারের জন্য আসে শুভলং ঠাকুর, ধর্মদেশনা স্থানে শুভলং ঠাকুরের নামে এ মন্দির ও মেলা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রয়াত রমাকান্ত দত্ত ও স্নেহ বালা দত্ত। শুভলং ঠাকুরের মন্দিরকে কেন্দ্র করে চৈত্র মাসের প্রথম শনিবার এ মেলা ফকিরখীল হিমছড়ি খোলা শুভলং ঠাকুর মন্দির প্রাঙ্গণে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় পার্শ্ববর্তী দেশসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিভিন্ন মানত নিয়ে এ শুভলং মন্দিরে আসে। মেলা ছাড়াও বছরের প্রতিদিন কেউ না কেউ এ মন্দিরে তাদের মানত নিয়ে আসতে দেখা যায়। তবে সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এর সংখ্যা বেশি থাকে। স্থানীয়দের মতে, শুভলং ঠাকুর এ হিমছড়ি খোলায় বসে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। দীর্ঘদিন ধ্যান মগ্নে থাকা অবস্তায় তিনি ইহ জগত ত্যাগ করলে, তাকে এ হিমছড়ি খোলায় সমাহিত করা হয়। তার সমাহিত স্থানে একটি মন্দির করলে, মন্দিরটি স্মৃতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। পূজারীরা এ মন্দিরের জন্য মানত করা শত শত ছাগল বিভিন্ন পূজনীয় দান মন্দিরে উৎসর্গ করেন মেলায় আসা পুজারীরা। যেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মহিলারা তাদের সন্তানদের জন্য মানত করে পূজা দেয়, তাদের সে মনোবাসনা পূরণ হয় বলেও তাদের বিশ্বাস।
এছাড়া সারাবছর বিভিন্ন মানত নিয়ে পুণ্যের লক্ষ্যে মন্দিরে দুধ, ছাগল, কবুতর, ফল-ফলাদি উৎসর্গ করে থাকেন সনাতন ধর্মের অনুসারীরা। তাদের বিশ্বাস এখানে দুধ, ছাগল, কবুতর এমনকি স্বর্ণের অলংকার উৎসর্গ করলে মনের সব বাসনা পূর্ণ হবে। আর তাই সারা বাংলাদেশের হাজার হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের নানা মনের বাসনা পূরণের লক্ষ্যে মানুষগুলো একই মোহনায় মিলিত হয় চৈত্র মাসের প্রথম শনিবার এ মিলন মেলায়। এখানে দিনব্যাপী চলে পূজা-উৎসব। সে সাথে প্রত্যেকে স্ব-স্ব ধ্যানে-জ্ঞানে মগ্ন থাকে পূজা-অর্চনায়। পুণ্যার্থীদের ভিড়ে এ দিনটি উৎসব মুখর থাকে মন্দিরের চারপাশ। একইভাবে পুণ্যার্থীদের দানের স্তূপ পড়ে যায় এ মন্দিরে যা ব্যবহার করে মন্দিরের পরিচালনা পরিষদ মন্দির সংস্কার ও নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়। বর্তমানে এ মন্দির নির্মাণের জন্য পুণ্যার্থীদের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। তাছাড়া মন্দিরকে ঘিরে বাউন্ডারি ওয়াল, ঘাটসহ অন্যান্য খাতে আরো পরিকল্পনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।