চকরিয়ায় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে সীমানা প্রাচীরে ভেঙে বন্যহাতির পাল
রাজু দাশ (চকরিয়া প্রতিনিধি)
কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভেতরে ঢুকে শাবকসহ ২৩টি বন্যহাতি ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। ক্ষুধার্ত এসব হাতি দুই দলে বিভক্ত হয়ে পার্কের অভ্যন্তরে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সৃজিত বাগানে অবস্থান করছে। গহীন জঙ্গল থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় এসব বন্যহাতির পাল পার্কে হানা দিয়ে তান্ডব চালিয়ে ভোর হতে না হতে আবারও গহীন জঙ্গলে চলে যাচ্ছে। এভাবে গত এক সপ্তাহ ধরে হাতিগুলো পার্কের ভেতর আসা-যাওয়া করছে। এদিকে হাতির পাল সীমানা টপকে পার্কে ঢুকে বাগান নষ্ট করায় পার্ক কর্তৃপক্ষ রেড অ্যালার্ট জারি করে সেখানে বন কর্মীদের সতর্ক পাহারায় রেখেছেন। একই সাথে পর্যটক-দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ও জোরদার করা হয়েছে।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, গেল ডিসেম্বর মাসে দুই দফায় ক্ষুধার্ত বন্যহাতির দলটি গহীণ জঙ্গল থেকে এসে বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে ঢুকে পড়ে। ওইসময় হাতিগুলো দুই দলে ভাগ হয়ে পার্কের অভ্যন্তরে তাণ্ডব চালায়। এসব হাতি পার্কের বন্যপ্রাণী আবাসস্থলের ব্যাপক ক্ষতি করে। তখন হাতিগুলো পাকের ভেতর প্রায় ৫দিন অবস্থান করেছিল। এরপর শাবকসহ ১০টি ও ১৩টি করে দুইদলে ভাগ হয়ে বন্য হাতিগুলো চলে যায় পাহাড়ের দিকে।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘গেল বছরের ডিসেম্বর মাসের দুইদফায় বন্য হাতিগুলো পার্কের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। ওইসময় তারা পার্কের বাগানে তাণ্ডবও চালায় এবং বেশ কয়েকদিন অবস্থান করে।
তিনি জানান, একইভাবে হাতির দলটি গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই পার্কের অভ্যন্তরের পশুখাদ্যের বাগানে ঢুকে পড়ছে। আবার ভোরের আলো ফোটার আগেই গহীন জঙ্গলের নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে।
পার্ক কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম আরো বলেন, ‘এভাবে প্রতিদিন যাওয়া-আসা করায় পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকর্তাবস্থায় রাখা হয়েছে। যেসব এলাকায় বন্যহাতি অবস্থান করছে সেখানে কিছুদূর পরপর পার্কের কর্মচারীরা অবস্থান নিয়েছে। যাতে পার্কে আগত পর্যটক-দর্শনার্থীরা ভুল করে ওইদিকে যেতে না পারে।’
পার্কের সীমান্তবর্তী এলাকা কৈয়ারডেবা এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, ‘গত একসপ্তাহ ধরে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর শাবকসহ ১০টি ও ১৩টি করে দুই দলে ভাগ হয়ে আমাদের বসতবাড়ির কাছের পার্কের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ছে। তবে ভোরের আলো ফোটার পর পরই ফের গহীন জঙ্গলে চলে যাচ্ছে হাতিগুলো। এরপরও বন্যহাতি আসার কারণে প্রতিরাতেই আতঙ্কে রয়েছি আমরা। তিনি আরও বলেন হাতির পাল যদিও সাফারি পার্কে ঢুকে পড়ছে তবে তেমন কোন ক্ষতি সাধিত হয়নি পার্কের।
এ ব্যাপারে পার্কের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমি অবগত নই। তিনি বণ্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন বনকর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
এ ব্যাপারে জানতে বণ্যপ্রাণী ব্যাস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন বনকর্মকর্তা আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। ##
